প্রকাশিত: ১১/১২/২০১৭ ৯:৪৮ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৯:৪৬ এএম

গ্রামাঞ্চলে তরুণ প্রজন্মের ছেলেরা এখন খুব মজা করছে। তবে এ মজা শুধু যে গ্রামেই হচ্ছে তা কিন্তু নয়, শহরেও হচ্ছে। বলা যায় এই মজার আনন্দ গ্রামের চেয়ে শহরেই অনেক বেশী। তবে গ্রামের ছেলেরা অন্ধকার পরিবেশেই জটলা হয়ে পাশাপাশি বসে তাদের নিজস্ব মোবাইলে গেম খেলে আনন্দ করছে।

গ্রামীণ জনপাদে এমন পরিবেশ কি করে শুরু হয়েছে তা জানতে চাইলে সোহাগ আহম্মেদ বলেন, এই তো বেশ কিছু দিন আগের কথা, রাখাল যুবকরা বট গাছের ছায়ায় বা প্রিয় অন্য কোন ছায়া শিতল গাছের তলে ভর দুপুরে কচি কাঁচা সবুজ ঘাসে গরুর পাল ছেড়ে দিয়ে ইঁটের খোয়া বা অন্য কোন শক্ত বস্তু নিয়ে,অথবা মাটির ছোট ঢেলা দিয়ে চমৎকার কয়েকটি গুটি বানিয়ে মশ্রীণ মাটিতে কয়েকটি রেখা টেনে খোপ খোপ ঘর বানিয়ে বাগ বরকি’র মহা লড়াইয়ে জয়-পরাজয়ের আনন্দে মসগুল ছিল। তা তো বিলুপ্তির পথে, এই খেলা গুলো আর গ্রামের ছেলেরা খেলে না। তারা মোবাইল আসায় এই খেলাগুলো দলগত ভাবে মোবাইলেই খেলছে। অসচ্ছ এ বিষয় তিনি আরও সচ্ছ করেই বলেন, মোবাইলে এ গেম খেলার আনন্দ আসলে জয়-পরাজয়ের আনন্দ। তাশ খেলার মত টাকা পয়সা দিয়েও খেলছে। আধুনিক যুগে মোবাইলে এই গেম খেলা আসলেই যুব সমাজকে অনেকাংশ ধ্বংস করছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই গেম শহরের ছেলে মেয়েরা খুব বেশী খেললেও গ্রামের ছেলেরাই শুধু খেলছে। গ্রামাঞ্চলের তরুণ প্রজন্ম নাকি আধুনিক এই প্রযুক্তি থেকে পিছিয়ে থাকতে কখনো চান না।

গ্রামাঞ্চলে এখন দেখা যায় প্রত্যেকটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, সেহেতু মোবাইলে চার্জের কোনই সমস্যা তাদের হয় না। মোবাইল বা ট্যাব কারণে অকারণে তরুণ প্রজন্মের সব ছেলেরাই ব্যবহার করছে। আধুনিক এই ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের বদৌলতে রাত ভর অনেক মজার গেম বেছে নিয়েই পড়াশুনা না করে গেম খেলছে। অতএব বলা যায়, তরুণ প্রজন্মের ছেলেরা একটুখানিই তো ধ্বংসের পথে যাচ্ছে। জীবনে তারা তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়া স্বপ্ন গুলোকে বাদ দিয়ে গেম খেলছে ঘন্টার পর ঘন্টা। আবার এর পাশা পাশি অতিরিক্ত আনন্দ পাওয়ার জন্যই মরন নেশা গাঁজাও সেবন করছে।

তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা তাদের মোবাইলে গেমের পাশাপাশি ইন্টারনেটেও অনেক বেশি সময় কাটাচ্ছে সেহেতু তাদের মস্তিষ্কে নাকি রাসায়নিক পরিবর্তনও ঘটছে। এমন আসক্তিতে তাদের মধ্যে হতাশা এবং উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে। এই বিষয়ের প্রতি অবজ্ঞা না করে তাদের প্রতি কঠিন দৃষ্ট দিতে হবে।সুতরাং গ্রাম হোক আর শহরই হোক না কেন, বাবা মা এবং তাদের বড়দের উচিৎ ঘরে-বাহিরে তারা কি করছে দেখা। রাত্রি বেলা না ঘুমিয়ে গেম খেলছে কিনা। গবেষকদের গবেষণায় জানা যায় যে, ঘুমের আগে মোবাইলের ডিসপ্লের আলোক রশ্মি ঘুমের হরমোনকে নাকি অনেক বাধা সৃষ্টি করে৷ তাই বাবা মাদের প্রতি গবেষকদের পরামর্শ, ঘুমের আগে যদি সন্তানকে প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসতে দেওয়া হয় তা হলে অনেক ক্ষতি হবে। তাদেরকে অবশ্য অকারণে অহেতুক এসব ইলেকট্রোনিক্স যন্ত্র ব্যবহারে বাধা সৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে। ঘুম না হলে অসুস্থ ভাবেই বেড়ে ওঠা এইসব কমলমতি তরুণ তরুণীদের খুব ক্ষতি হবে। পরিপূর্ণ ঘুম না হলে যে তাদের অমূল্য সম্পদ স্মৃতিশক্তির স্বাভাবিকতা বিনষ্ট হবে। তাই সময়ের যথাযত ব্যবহারের ক্ষেত্রে এসব মুঠোফোন বা ইলেকট্রোনিক্স যন্ত্রের মতো এমন বদঅভ্যাসকে পরিহার করতে হবে।

নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক’।

পাঠকের মতামত

আসলে কি বয়কট করছি!

আমরা বাঙালি নতুন ইস্যু পেলে দৌড়ে তা দেখার জন্য উৎকণ্ঠা প্রকাশ করি। আজ বয়কট নিয়ে ...